বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কিভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন?- আসসালামুয়ালাইকুম উয়া রাহমাতুল্লাহ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে অশেষ মেহেরবানি যিনি এই আসমান,জমিন লৌহ কলম সৃষ্টি করেছেন। আমরা একমাত্র তারই এবাদত করি। আর এই ইবাদাতের মূল হচ্ছে নামাজ। নামাজ এমন একটি ইবাদাত যার দ্বারা অতি সহজে আল্লহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। নামাজ মানে শান্তি,নামাজ মানে বেহেস্ত। যেমনটা আমরা জানি (আসসালাতু মিফতাহুল জান্নাহ, অর্থাৎ,নামাজ বেহেস্তের চাবি) অন্যভাবে বলতে গেলে নামাজ হচ্ছে দিনের খুটি (আসসালাতু ইমাদুদ্দিন)। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন নামাজকে অতিব গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। আর আজকে নামাজ এর স্বয়ং সম্পুর্ণ বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা করা হলো। নামাজ মূলত হচ্ছে ৫ ওয়াক্ত যা ফরজ এমনকি বাধ্যতামূলক। পরবর্তিতে যে গুলা প্রয়োজনীয় যেমন, জুময়ার নামাজ, জানাযার নামাজ এগুলো নিয়েও পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।
কিভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন?
নামাজ ৫ ওয়াক্ত হলো, ফজর, যোহর, আছর, মাগরিব, এশা।
১। ফজরঃ ফজরের নামাজ হচ্ছে সকল নামাজের মূল। ফজরের নামাজের অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো ফজরের নামাজ মানুষের চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
সময়ঃ সূর্যদয়ের ২৩ মিনিট পুর্ব পর্যন্ত। অর্থাৎ তাহাজ্জুতের নামাজের পর থেকে শুরু। সাধারন ভাবে রাত ১২টার পর থেকে ফজরের নামাজের সময় শুরু হয়।
নিয়মঃ ফজরের নামাজ ৪ রাকাত। ২ রাকাত সুন্নত এবং ২ রাকাত ফরজ।
কিভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন?
২ রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম হলোঃ প্রথমে অজু করে জায় নামাজে দাড়াতে হবে। দোয়া পরতে হবে -জায়নামাজের । (ইন্নি উয়াজ্জাহতু উয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারা সসামাওয়াতি উয়াল আরদ্বি হানিফা উয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন)।
নিয়তঃ তারপর নিয়ত করতে হবে, (নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহিতায়ালা রাকাতাই সালাতি ফাজরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল ক্বাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার) বলে রাকাত বাধতে হবে। দুই হাত কাধ বরাবর নিয়ে যাতে হাতের তালু দুইটি কাবার দিকে থাকে তারপর হাত নামিয়ে নাভির নিচে অথবা নাভির উপরে বাধতে হবে।
যেভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন- নিয়ম?
অতঃপর পড়তে হবে (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা বিহামদিকা উতাওয়া রাকাসমুকা উয়াতায়ালা জাদ্দুকা উয়ালা ইলাহা গাইরুক)। তারপর সুরা ফাতিহা পড়তে হবে (আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, আররাহমানির রাহিম,মা-লিকিয়াউ মিদ্দিন, ইয়া কানা’ বুদু উয়া ইয়া কানাসতায়িন, ইহদিনাসসিরাতাল মুস্তাকিম, সিইরা ত্বাল্লাজিনা আন আম তায়ালাইহিম, ঘাইরিল মাগদু বিয়ালাইহিম, উয়ালাদ্দুয়াল্লিন, “আমিন” ) এর পর যে কোন একটি সূরা পড়তে হবে।
তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে গিয়ে পড়তে হবে { সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম (৩ বার উত্তম, এর থেকে বেশি পড়লে ভাল)} সামিয়াল্লাহুলিমান হামিদা বলে রুকু থেকে উঠতে হবে। সোজা হয়ে দাড়াতে হবে। তারপর আবার আল্লহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে। (সিজদার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা রেখে দেহটাকে নিচের দিকে ঝুকিয়ে পরবর্তিতে হাটু ঝুকিয়ে প্রথমে নাক পরে কপাল মাঠিতে লাগানো)
সিজদায় গিয়ে পড়তে হবে (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা, ঠিক আগের মতো, ৩ বার উত্তম, বেশি পড়লে ভালো)। আল্লাহু আকবার বলে সিজদাহ থেকে বসা, সিজদা দুটি দিতে হয়। সেজন্য আল্লাহু আকবার বলে সিজদাহ থেকে বসা অবস্তায় তারপর আবার সিজদায় যেতে হবে। এবং ২য় সেজদায় আগের মতোই হবে (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা, ঠিক আগের মতো, ৩ বার উত্তম, বেশি পড়লে ভালো) বলতে হবে। তবে এখানে উল্লেখ দুই সেজদার মাঝে এই দোয়াটি পড়তে হবে। দোয়াটি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন। তারপর আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে।
শেষ রাকাতের নিয়ম
আবার ঠিক আগের মতোই সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে মিলিয়ে যে কোন একটি সুরা পড়তে হবে। “তার পর রুকুতে যেতে হবে রুকু গিয়ে (সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম) (৩ বার উত্তম, এর থেকে বেশি পড়লে ভাল)} তারপর সামিয়াল্লাহুলিমান হামিদা বলে দাড়াতে হবে। আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় গিয়ে ঠিক আগের মতোই (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা) তারপর আল্লাহু আকবার বলে প্রথম বার বসতে হবে। তার পর দ্বিতীয় বার সেজদায় সেতে হবে (প্রথম রাকাতের মতোই) ।
এখন দ্বিতীয় বারে দ্বিতীয় রাকাতে বসে পড়তে হবে। অর্থাৎ ২য় রাকাতের সেজদা উঠে থেকে বসতে হবে। তারপর বসেই পড়তে হবে (আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি উয়াসসালাউয়াতু উয়াত্তাইয়িবাতি আসসালামু আলাইকা আইয়ু হান্নাবিয়ু উউয়া রাহমাতুল্লাহি উয়া বারাকাতুহু আসসালামু আলাইনা আলা ইবাদিল্লাহিস সুয়ালিহিন, আসহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু উয়া আসহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদু হুয়া রাসুলুহু )
প্রতিয়মান আসহাদু আল্লাহ ইলাহা বলে শাহাদাত আঙ্গুলি উপরের দিকে ধাবমান করতে হবে। তার পড় (আল্লাহুম্মা সাল্লিয়ালা মুহাম্মাদিউ উয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা উয়ালা আলি ইব্রাহিম ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ)(আল্লাহুম্ম বারিক আলা মুহাম্মাদিউ উয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাক তা আলা ইব্রাহিমা উয়ালা আলি ইব্রাহিম ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ) (আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাছিরা উয়ালা ইয়াগফিরু জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরিলি মাগফিরাতাম মিন হিমদিকা উয়ার হামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুররাহিম) বলে সালাম ফিরাতে হবে। প্রথমে আসসালামুয়ালাইকুম উয়া রাহমাতুল্লাহ বলে ডান দিকে পরে বাম দিকে মস্তক ঘুরাতে হবে ।
ফরজ দুই রাকাতের নিয়ম ও নিয়ত
২ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম হলোঃ ২ সুন্নত এর মতই ফরজ ২ রাকাত পড়তে হয়। নিয়ম প্রায় একই , কিছু পার্থক্য নিয়ত পড়ার মধ্যে আছে। যাইহোক তারপর ও পুরো বিস্তারিত বলছি।
প্রথমে অজু করে জায়নামাজে দাড়াতে হবে। জায়নামাজের দোয়া পরতে হবে। (ইন্নি উয়াজ্জাহতু উয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাসসামাওয়াতি উয়াল আরদ্বি হানিফা উয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন)।
তার পর নিয়ত করতে হবে, (নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহিতায়ালা রাকাতাই সালাতি ফাজরি ফারদুল্লাহি তায়ালা ‘’ইমামের পিছনে পড়লে’ইকতা দাইতু বিহাজাল ইমাম অথবা ইমামতি করলে আনা ইমামু লিমান হাদ্বারা উয়ামাইন ইয়াহদুরু’’ মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল ক্বাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার)বলে রাকাত বাধতে হবে।
দুই হাত কাধ বরাবর নিয়ে যাতে হাতের তালু দুইটি কাবার দিকে থাকে তার পর হাত নামিয়ে নাভির নিচে অথবা নাভির উপরে বাধতে হবে । পড়তে হবে (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা বিহামদিকা উতাওয়া রাকাসমুকা উয়াতায়ালা জাদ্দুকা উয়ালা ইলাহা গাইরুক)।তার পর সুরা ফাতিহা পড়তে হবে (আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন, আররাহমানির রাহিম,মা-লিকিয়াউ মিদ্দিন, ইয়া কানা’ বুদু উয়া ইয়া কানাসতায়িন, ইহদিনাসসিরাতাল মুস্তাকিম, সইরা ত্বাল্লাজিনা আন আম তায়ালাইহিম, ঘাইরিল মাগদু বিয়ালাইহিম, উয়ালাদ্দুয়াল্লিন,) এরপর যে কোন একটি সূরা পড়তে হবে।
তারপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে গিয়ে পড়তে হবে { সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম (৩ বার উত্তম, বেশি পড়লে ভাল)} সামিয়াল্লাহুলিমান হামিদা বলে রুকু থেকে উটতে হবে। আবার আল্লহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে। (সিজদার নিয়ম হচ্চে প্রথমে পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত সোজা রেখে দেহটাকে নিচের দিকে ঝুকিয়ে পরবর্তিতে হাটু ঝুকিয়ে প্রথমে নাক পরে কপাল মাঠিতে লাগানো) সিজদায় গিয়ে পড়তে হবে (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা, ঠিক আগের মতো, ৩বার উত্তম, বেশি পড়লে ভাল)। আল্লাহু আকবার বলে সিজদাহ থেকে বসা অবস্তায় তার পর আবার সিজদায় যেতে হবে। আগের মতোই বলতে হবে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে যেতে হবে।
শেষ রাকাতের নিয়ম
আবার ঠিক আগের মতোই সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে মিলিয়ে যে কোন একটি সুরা পড়তে হবে। তারপর রুকুতে যেতে হবে রুকু গিয়ে (সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম)তার পর সামিয়াল্লাহুলিমান হামিদা বলে দাড়াতে হবে। আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় গিয়ে ঠিক আগের মতোই (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা)তার পর আল্লাহু আকবার বলে প্রথম বার তার পর দ্বিতীয় বার । এখন দ্বিতীয় বারে দ্বিতীয় রাকাতে বসে পড়তে হবে।
বসে পড়তে হবে (আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি উয়াসসালাউয়াতু উয়াত্তাইয়িবাতি আসসালামু আলাইকা আইয়ু হান্নাবিয়ু উউয়া রাহমাতুল্লাহি উয়া বারাকাতুহু আসসালামু আলাইনা আলা ইবাদিল্লাহিস সুয়ালিহিন, আসহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহু উয়া আসহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদু হুয়া রাসুলুহু )প্রতিয়মান আসহাদু আল্লআহ ইলাহা বলে শাহাদাত আঙ্গুলি উপরের দিকে ধাবমান করতে হবে। তার পড় (আল্লাহুম্মা সাল্লিয়ালা মুহাম্মাদিউ উয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা উয়ালা আলি ইব্রাহিম ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ)(আল্লাহুম্ম বারিক আলা মুহাম্মাদিউ উয়ালা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাক তা আলা ইব্রাহিমা উয়ালা আলি ইব্রাহিম ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ)(আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাছিরা উয়ালা ইয়াগফিরু জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরিলি মাগফিরাতাম মিন হিমদিকা উয়ার হামনি ইন্নাকা আনতাল গাফুরুররাহিম) বলে সালাম ফিরাতে হবে। প্রথমে আসসালামুয়ালাইকুম উয়া রাহমাতুল্লাহ বলে ডান দিকে পরে বাম দিকে মস্তক ঘুরাতে হবে ।
কিভাবে ফজরের নামাজ পড়বেন? এত বড় একটা পোষ্ট সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
সাথে থাকুন, কেমন লাগলো জানাতে কমেন্ট করুন।
ফজর | রাকাত |
সুন্নত | ২ রাকাত |
ফরজ | ২ রাকাত |
ধন্যবাদ?
Assalamualaikum
Dhonobad vaiya 🤍💚
আল্লাহ আপনার ভালো করবেন।
Thank you for making this rule
I’m so many happy to read the rules
ধন্যবাদ
.
.
কিন্তু দুই সিজদাহ্ মধ্যে কি বলতে হবে সেটা যদি থাকতো তাহলে আরও ভালো হতো!
ধন্যবাদ
মাশাল্লাহ। খুবই ভালো হইছে। অনেক কিছু শিক্ষা অর্জন করতে পালাম।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এত সুন্দর ভাবা সব কিছু দেয়ার জন্যে
ধন্যবাদ, খুবই দরকারী পোস্ট দেওয়ার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই
মাশাল্লাহ। খুবই ভালো হইছে। অনেক কিছু শিক্ষা অর্জন করতে পালাম।